ইবাদত, রোজা ও করণীয়
🌙 রমজান: ইবাদত, রোজা ও করণীয় 🌙
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে...” (সুরা আল-বাকারা: ১৮৩)
১. রোজার মূল বিধান ও শর্তাবলি
- ফরজ রোজা: সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম নারী-পুরুষের জন্য রমজানের রোজা ফরজ।
- নিয়ত (ইচ্ছা): প্রতিদিন অন্তরে নিয়ত করা জরুরি। মুখে বলা সুন্নত।
- সেহরি ও ইফতার: সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও কুপ্রবৃত্তি থেকে বিরত থাকা।
- রোজা ভঙ্গের কারণ: ইচ্ছাকৃত পানাহার, স্ত্রী সহবাস করলে রোজা নষ্ট হয় ও কাফফারা বা কাজা দিতে হয়।
২. রোজার সময় যেসব বিষয় এড়িয়ে চলা জরুরি
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও মন্দ কাজ ত্যাগ করেনি, তার ক্ষুধা-তৃষ্ণা সহ্য করার আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই" (বুখারি)।
- মিথ্যা, গীবত, ও অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকা।
- অনর্থক কাজ ও সময় নষ্ট না করা (অতিরিক্ত টিভি, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি)।
- রাগ নিয়ন্ত্রণ করা ও ধৈর্য ধারণ করা।
৩. বিশেষ ইবাদত ও আমল
- তারাবিহ নামাজ জামাতের সাথে পড়া।
- কুরআন তেলাওয়াত ও অর্থ বোঝার চেষ্টা করা।
- লাইলাতুল কদরের রাতে ইবাদত করা।
- গরিবদের দান-সদকা করা ও ফিতরা আদায় করা।
৪. স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ
- সেহরিতে পুষ্টিকর খাবার খান (প্রোটিন, শাকসবজি, খেজুর)।
- ইফতারে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া না খেয়ে পরিমিত খাবার গ্রহণ করুন।
- ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
৫. রোজা না রাখার শাস্তি ও পুরস্কার
রোজার পুরস্কার: হাদিসে এসেছে, "রোজাদারের জন্য জান্নাতের বিশেষ দরজা (রাইয়ান) থাকবে, যা দিয়ে কেবল রোজাদাররাই প্রবেশ করবে" (বুখারি, মুসলিম)।
রোজা না রাখার শাস্তি: নবী (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি কোনো ওজর ছাড়া রোজা ভেঙে ফেলে, সে যদি সারা জীবনও রোজা রাখে, তবুও সেই রোজার ক্ষতিপূরণ হবে না" (আবু দাউদ)।
৬. রমজান পরবর্তী করণীয়
- সদকায়ে ফিতর আদায় করা।
- শাওয়াল মাসে ৬ রোজা রাখা (পুরো বছর রোজার সওয়াব পাওয়া যায়)।
- রমজানে গড়ে তোলা নেক অভ্যাস চালিয়ে যাওয়া।
৭. গুরুত্বপূর্ণ দোয়া
ইফতারের দোয়া:
اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার জন্য রোজা রেখেছি, তোমার উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি, তোমার উপর ভরসা করেছি এবং তোমার দেওয়া রিজিক দ্বারা ইফতার করছি।
Comments
Post a Comment